বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:০২ পূর্বাহ্ন

প্রার্থীর মৃত্যু বা অক্ষম হলে কী হবে

প্রার্থীর মৃত্যু বা অক্ষম হলে কী হবে

স্বদেশ ডেস্ক:

প্রশ্নটি অস্বস্তিকর! কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর নানা প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আসন্ন পরিস্থিতি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছে। এর মধ্যে এটিও রয়েছে যে, নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর মৃত্যু হলে আসলে কী হবে। যদিও এর আগে মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে নির্বাচনের আগে প্রার্থী মৃত্যুর ঘটনা নেই। কিন্তু কোন পরিস্থিতে কী করণীয় সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেওয়া আছে।

শুক্রবার ট্রাম্প যখন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর দেন সেই সময় তার মৃদু উপসর্গ ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এমনকি হাসপাতালে থেকে কাজও করছেন। সেই ছবিও হোয়াইট হাউস প্রকাশ করেছে। তবে চিকিৎসকরা গতকাল জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা ট্রাম্পের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে ট্রাম্প তার সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। মার্কিন জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমি শিগগিরই ফিরে আসছি। কিন্তু ট্রাম্পের বয়স ও ওজন মিলিয়ে ঝুঁকি রয়েছে বলে প্রথম দিনই চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন। মার্কিন নির্বাচনে এবার যে দুই প্রার্থী অংশ নিয়েছেন তাদের দুজনেরই বয়স ৭০-এর বেশি। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৭৪ আর জো বাইডেনের ৭৭।

সংবাদ মাধ্যম আই নিউজ বলছে, অতীতে কখনো এমনটি হয়নি। এমনকি মার্কিন ইতিহাসে নির্বাচনের আগে কোনো প্রার্থী মৃত্যু অথবা অক্ষম হওয়ার ঘটনাও নেই। শুধু ১৮৭২ সালে হোরেস গ্রিলি ৪০ শতাংশ ভোট পাওয়ার পর মারা যান, কিন্তু তখনো ইলেক্ট্রোরাল কলেজ ভোট গণনা হয়নি। যদিও তিনজন ইলেক্ট্রোরাল কোনোভাবে তাকে ভোট দিয়েছিলেন কিন্তু কংগ্রেস সেই ভোটগুলো অবৈধ ঘোষণা করে। এর ফলে তার বিরোধী পক্ষ ইউলিসিস এস গ্রান্ট পুনর্নির্বাচিত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী- প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যদি প্রার্থীর মৃত্যু হয় অথবা অক্ষম হন তাহলে সেই প্রার্থীর দল নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। কিন্তু এই পদে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা করবেন না। দেশটির রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলেরই এ বিষয়ে পৃথক বিধান রয়েছে। এবার আসা যাক, জনসাধারণের ভোটগ্রহণের পর যদি প্রার্থীর মৃত্যু হয় সেক্ষেত্রে কী হবে? সেই বিষয়েও নিয়ম বলা আছে। কেননা মার্কিন নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেক্ট্রোরাল কলেজ ভোটের মাধ্যমে। বলা হচ্ছে, এ বছর ইলেক্ট্রোরাল কলেজ ভোট ১৪ ডিসেম্বরের আগে হবে না। অর্থাৎ নির্বাচন ৩ নভেম্বর হলে ইলেক্ট্রোরাল ভোট হবে ১৪ ডিসেম্বর। তাহলে ইলেক্ট্রোরাল কলেজ ভোটের আগে যদি প্রার্থীর মৃত্যু হয় তাহলে কী হবে? এই ক্ষেত্রেও ওই প্রার্থীর দল পূর্বের নিয়মে নতুন প্রার্থী নির্ধারণ করবে।

এরপরও কথা থেকে যাচ্ছে, নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট যদি শপথ গ্রহণের আগে মারা যান তখন কী হবে। এই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে উঠবে! এবার নতুন মেয়াদে প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ৬ জানুয়ারি ২০২১ সালে। ধরা যাক ১৫ ডিসেম্বর নির্বাচিত প্রার্থীর মৃত্যু হলো। এই ক্ষেত্রে কংগ্রেস ভোট গণনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবে। এ ক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্টকে প্রেসিডেন্ট করার বিধান রয়েছে। এই ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম না হলে প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে তিনজন প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবে। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এবারের নির্বাচন এমন সময় হচ্ছে যখন করোনার মহামারী চলছে। মহামারীর কারণে শুরু থেকেই এবারের নির্বাচন নিয়ে সংশয় ছিল। এখন ট্রাম্প করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় নির্ধারিত দিনে ভোট নিয়ে সেই শঙ্কা আরও বেড়ে গেল। নির্বাচন স্থগিত রাখা হতে পারে কিনা সেই প্রশ্নও দেখা দিয়েছে। যদিও সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ। মার্কিন সংবিধান কংগ্রেসকে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করার এখতিয়ার দিয়েছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উঠলে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ ভেটো দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে সহজেই প্রস্তাবটি পাস হয়ে যাবে। তবে এসব এখনো জল্পনার পর্যায়েই রয়েছে। কেননা ট্রাম্প দ্রুত সেরে উঠলে এসব প্রসঙ্গ দুদিনেই হাওয়ায় মিলে যাবে!

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877